‘সুবিধা নেয় বলে বেগম পাড়ার বাড়ির মালিকদের নাম প্রকাশ করেছে না’

বিদেশে সেকেন্ডহোম ও বেগমপাড়ার বাড়ির মালিক আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদের কাছ থেকে ক্ষমতাসীনরা বেনিফিট নেন বলে তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, ‘আমরা কখনো শুনি নাই সুইস ব্যাংকে টাকার কথা, সেকেন্ড হোমের কথা, বেগম পাড়া কথা, গত কয়েক বছর ধরে আমরা শুনছি। জনগণ দাবি করছে বেগম পাড়ায় কাদের বাড়ি? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন রাজনীতিবিদদের থেকে আমলা ও ব্যবসায়ীদের বাড়ি বেশি। কারা সে সকল আমলা ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদ। এ সব জানার অধিকার বাংলাদেশের মানুষের রয়েছে। এসব আপনারা বলবেন না, এটা আমরা জানি কারণ এসব আপনাদের (সরকার) লোক। তাদের নিকট থেকে আপনারা বেনিফিট নেন বলেই তাদের কথা প্রকাশ করতে চান না।

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা জেলা বিএনপি আয়োজিত লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন।

ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাকের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানার সভাপতি নিপুন রায় চৌধুরী, নাজিম উদ্দিন, মোজাদ্দেদ আলী বাবু সহ জেলার নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে ঢাকা জেলা বিএনপির দশটি ইউনিট (থানা, উপজেলা ও পৌর কমিটি) উপস্থিত থাকার ছিলো। এর মধ্যে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ ও দোহার নবাবগঞ্জ থেকে উল্লেখযোগ্য নেতাকর্মী যোগদান করলেও বাকি ইউনিট গুলো থেকে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিলো হাতে গোনা।

সমাবেশে নজরুল ইসলাম খান বলেন, গত আট বছরে যত বাজেট তার থেকে বেশি ব্যয় বিদ্যুৎ খাতে করা হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন হলে, তাহলে বিদ্যুৎ ঘাটতি কেন?

বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যা বিদ্যুৎ প্রয়োজন তার থেকে ডাবল আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা এত বেশি তাহলে কেন এত বেশি টাকা দিয়ে কুইক রেন্টালের চুক্তি বারবার বাড়ানো হচ্ছে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, যারা সরকারে রয়েছেন তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। রাতের বেলা ভোট করে তারা ক্ষমতা দখল করে রয়েছে। সে কারণে জনগণের কাছে তাদের কোন জবাবদিহিতা নেই, যদি থাকতো তাহলে জনগণের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য তারা কাজ করত। কিন্তু সেটা তারা না করে নিজেদের এবং নিজেদের যারা আপন তাদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য কাজ করেছে। এ কারণে আজকে বাংলাদেশের মানুষ দুর্দশার মধ্যে পড়েছে। এর চেয়ে বেশি দুর্দশার আশঙ্কা করছে।

নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, আমাদের দেশে কুইক রেন্টাল নামক এক আজব বিষয় আছে। কুইক রেন্টালের নামে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা জনগণের পকেট থেকে কিছু ব্যক্তিকে দেয়া হচ্ছে। শুধু শুধুই কি দেয়া হচ্ছে নাকি সেই টাকার ভাগ বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে। না গেলে অপ্রয়োজনীয় এই খাতে কেন টাকা ব্যয় করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বলা হয়েছিল আমাদের বিদ্যুৎ ব্যয়ের চেয়ে উৎপাদন ক্ষমতা অনেক বেশি। সেজন্য বিদেশে রপ্তানি করার চিন্তা করছে বাংলাদেশ। আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা এত বেশি তাহলে কেন এত বেশি টাকা দিয়ে কুইক রেন্টালের চুক্তি বারবার বাড়াচ্ছে। এমনকি আইন করা হয়েছে সংসদে এ সমস্ত দুর্নীতি অনাচারের বিরুদ্ধে কখনো আদালতে মামলা করতে পারবেন না। জনগণের টাকা লুট করা হবে তার জন্য জনগণ আদালতে যেতে পারবে না, এরকম অনাচার কোনমতেই গ্রহণযোগ্য নয়।